Saturday, March 10, 2018

সম্ভাবনাময় একটি বিদেশী ড্রাগন ফল: এই ফল চাষ করা খুবই সহজ

সম্ভাবনাময় একটি বিদেশী ড্রাগন ফল: 
এই ফল চাষ করা খুবই সহজ

ড্রাগন একটি সুস্বাদু ও সুমিষ্ট জনপ্রিয় ফল । এটি ক্যাকটাস গ্রুপের অর্ন্তভূক্ত । এই রসালো ফলটি খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে । বাংলাদেশে অনেক দিন ধরেই বিদেশী ফলের বাগান করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে । কোন কোন ফল চাষে সফলতা এসেছে । আবার কোন কোন ফল চাষে সফলতা আনতে পারেনি । আমাদের দেশের আবহাওয়া, মাটি ও আদ্রতা সব মিলিয়ে ড্রাগন ফল চাষে সফলতা এসেছে । এই ফল গাছটি আমাদের দেশের অন্যান্য ফল গাছের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে । থাইল্যান্ড, মালেশিয়া, ইন্দোনেশিয়া সহ এশিয়ার অনেক দেশেই এই ফলের চাষ অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে । উত্তর বঙ্গের কিছু জেলা, ময়মনসিংহ ও পার্বত্য অঞ্চলের কিছু অংশে এই ফলের বানিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছে । বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, খুবই অল্প সময়ের মধ্যেই এই ড্রাগন ফলটি সারা দেশে জনপ্রিয়তা অর্জন করে গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়তে পারে ।

                                                          ড্রাগন ফলটি ভিয়েতনামের জাতীয় ফল । এই ফল গাছটি ক্যাকটাস গ্রুপের অর্ন্তভূক্ত রসালো ফল দায়ক গাছ । ক্যাকটাস গ্রুপের এই গাছটিতেই শুধু ফল ধরে । ক্যাকটাসের অনেক জাত আছে, তার মধ্যে কয়েকটি জাতের গাছ আমাদের বাড়িতে শোভা বর্ধণ করে । ক্যাকটাস গ্রুপের আরো কিছু গাছ রয়েছে, যাদের সব্জি হিসাবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ গুলোতে খেয়ে থাকেন । ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের জার্ম প্লাজম সেন্টারে গবেষণার জন্য ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ড থেকে কিছু চারা সংগ্রহ করে এবং তা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন । 

                                                         এই ফলে অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে । যা হার্ট ও ডায়াবেটিক রোগে কার্যকর । এই ফল গাছ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল সহ সারা দেশে ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে । এই গাছ বাড়ির আশে-পাশে খুবই অল্প পরিমান পতিত জায়গায় চাষ করা সম্ভব । আমাদের দেশের যেখানে কোন ধরনের ফসল ফলানো সম্ভব নয়, সেখানেই এই ফলের চাষ সম্ভব । এই গাছের চারা বছরের যে কোন সময়ে লাগানো সম্ভব । এই গাছের ডাল থেকে ছোট ছোট শাখা বের হয়ে চারায় পরিণত হয় । এই চারার গুড়ি একটু শক্ত হলেই মাটিতে লাগাতে হয় । একটি চারা বড় হয়ে ফল ধরতে মাত্র ছয় মাস সময় লাগে । গাছের মূল কান্ডের পাশ দিয়ে ছোট ছোট ফুল হয়ে ফল ধরতে শুরু করে । শীতের সময়ে এই গাছে ফল ধরেনা । এই সময়ে গাছের উপরে ১০০ ওয়াটের ২টি লাইট প্রতিদিন ৬ ঘন্টা করে জ্বালিয়ে রাখলে গাছে ফল আসে । আমাদের দেশে একটি গাছে কমপক্ষে ৫০০টির বেশী ফল ধরে । প্রতিটি ফলের গড় ওজন ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম হয়ে থাকে । ভিয়েতনামে প্রতিটি ফলের গড় ওজন ১০০০ থেকে ১১০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে । 

                                                         এই গাছ থেকে চারা উৎপাদন খুবই সহজ । অল্প পানি সহ গোবর সারের মধ্যে, যদি সংগ্রহ করা ডালের গুড়ি কয়েক দিন পোতে রাখা যায়, তাহলে গুড়িতে শিকড় গজাতে শুরু করে । শিকড় সহ চারা গাছ লাগালেই গাছ বড় হতে শুরু করে । এই গাছ বড় হলে ডালগুলো দড়ি দিয়ে বেঁধে চার দিকে ঝুলিয়ে দিলেই গাছে প্রচুর ফল ধরে । চার দিকে যত বেশী ঝুলিয়ে রাখা যায়, তত বেশী ফল ধরে । 

                                                               এই গাছের গোড়ায় ২০ থেকে ২৫ কেজি গোবর সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি, ৫০ গ্রাম এমপি সার ও ৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার দিতে হয় । পিঁপড়ার উৎপাত ছাড়া তেমন কোন রোগ-বালাই নেই বললেই চলে । এ জন্য মাঝে-মধ্যে পিঁপড়া নাশক পাউডার ছিটাতে হয় । আগাছা হলে পরিস্কার করতে হয় । তাহলেই এর ফলন ভালো ফলন পাওয়া যায় । 

No comments: