কক্সবাজার টু সেন্টমার্টিন ভ্রমন
আমরা রেডি হয়ে বসে আছি । বাস কখন আসবে তার অপেক্ষায় সবাই । ছয়টা প্রায় বাজতে চলছে । চোখে ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে কক্সবাজারে হোটেল জামানের রিসিপসনে আমরা বসে আছি । আগের দিনই আমরা সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য প্যাকেজ বুকিং দিয়ে এসেছি । এখুনি টুরিস্ট বাস আমাদের নিতে আসবে । সবার মাঝেই এটা ঘুম ঘুম ভাব রয়েছে, তবুও আনন্দ যেন সবার ঘুমকে ম্লান করে দিয়েছিল । আমাদের পরিবারে ছিলাম তিন জন । আমি, আমার ছেলে তূর্য ও স্ত্রী অন্তরা । ইতিপূর্বে কোন দিন আমি সেন্টমার্টিন যাইনি । তাই নতুন জায়গায় ঘুরে বেড়াবো, বিষয়টা স্বপ্নের মতো লাগছিল । কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটা ট্রাভেল বাসের হর্ণ বাজার শব্দ শুনতে পেলাম । কিছুক্ষণের মধ্যেই বাস সুপারভাইজার জামান হোটেলের রিসিপসনে এসে আমাদের নেয়ার জন্য খোঁজ করলো । আমরা তার সাথে এসে বাসে বসলাম । সবার চোখেই ঘুমছিল, তবুও মনে যে সবার আনন্দের হাসি ছিল তা স্পষ্টই বুঝতে পারছিলাম । বাসটি আমাদের নিয়ে ছেড়েদিল ।
সামনেই সীবিচ এর বড় অংশ যেখানে বড় বড় পাথরের মতো প্রবাল রয়েছে । আমরা এসে প্রবালের উপর দাঁড়ালাম । চার দিকে বাতাস বইছে । ছোট ছোট ঢেউগুলো ঝাপটা মেরে আমার পা দুটি ভিজিয়ে দিচ্ছে । মাঝে মাঝে বড় ঢেউ এসে সমুদ্র পাড়ে আছড়ে পড়ছে । আমরা সমুদ্র পাড়ে রাখা চেয়ারে বসে ডাব খেলাম ও কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম । কিছুক্ষণ পর পুনরায় প্রবালের উপর এসে দাঁড়ালাম । প্রবালের পাশ দিয়ে ছোট ছোট মাছ ও কাঁকড়ার ঘুরাঘুরি দেখতে পেলাম । সমুদ্রের ঠান্ডা বাতাসের শো শো শব্দ আর ঢেউয়ের গর্জন শুনতে শুনতে আমাদের সময় শেষ হয়ে এলো ।
আমি একটি ছোট্ট শিশুকে বসে থাকতে দেখলাম । আমি ওর কাছে গেলাম । ওর কাছে কিছু ঝিনুক ও কয়েকটি প্রবাল দেখতে পেলাম । আমি ওগুলো সংগ্রহ করে লঞ্চে ফিরে এলাম । প্রকৃতি যে এতো সুন্দর হতে পারে, তা যদি স্ব-চক্ষে কেউ না দেখে তাহলে অনুমান করতে পারবে না । আমাদের লঞ্চ টেকনাফের উদ্দ্যেশে যাত্রা শুরু করলো । আমি লঞ্চে বসে ভাবতে লাগলাম । সেন্টমার্টিন এর প্রকৃতি এতো সুন্দর হতে পারে, তা না দেখলে বিশ্বাসই করতাম না । সেন্টমার্টিন এর সুন্দর প্রকৃতি, বাতাস আর ঢেউয়ের কথা মনে করতে করতে কখন যে টেকনাফ এসে পৌঁছে গেলাম, বুঝতেই পালাম না ।
0 Comments